রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর থেকে একাধিক জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের সূচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প (Lakshmir Bhandar) হলো এর মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয়, যা বাংলার মহিলাদের আর্থিক স্বাধীনতার দিকে এক বড় পদক্ষেপ। ২০২১ সালে চালু হওয়া এই প্রকল্প বর্তমানে রাজ্যের ১ কোটি ২১ লক্ষ মহিলার কাছে সরাসরি ভাতা পৌঁছে দিচ্ছে।
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের সূচনা ও উদ্দেশ্য
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “দিদিদের সঞ্চয়ের ধারণা থেকেই এই প্রকল্পের জন্ম। যখন কোনো সমস্যা দেখা দিত, তখন মহিলারা তাদের সঞ্চয় ভেঙে সেই পরিস্থিতি সামাল দিতেন। এই ভাবনা থেকেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের পরিকল্পনা।” মূলত গৃহস্থালির মহিলাদের আর্থিক সুরক্ষা প্রদান এবং তাদের দৈনন্দিন জীবনের খরচের কিছুটা ভার লাঘব করতেই এই উদ্যোগ।
এই প্রকল্পের আওতায় তপশিলি জাতি ও উপজাতি মহিলারা মাসে ১২০০ টাকা এবং সাধারণ সম্প্রদায়ের মহিলারা মাসে ১০০০ টাকা পান। প্রকল্পের এই সহায়তা মহিলাদের আর্থিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাদের পরিবারের সামগ্রিক উন্নয়নে সাহায্য করছে।
আরো পড়ুন: টোটোর নতুন নিয়ম চালু, যেকেউ টোটো চালাতে পারবে না, লাগবে “লাইসেন্স”
বর্তমান সুবিধাভোগীর সংখ্যা ও খরচ
২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পটি থেকে উপকৃত হয়েছেন বাংলার ২ কোটি ১৫ লক্ষ ৮৮ হাজার ৭৭৫ জন মহিলা। এই প্রকল্পে রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই ১৩,৫২৩.৮৮ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। সম্প্রতি আরও ৫ লক্ষ ৭ হাজার নতুন উপভোক্তা এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। ডিসেম্বর ২০২৪ থেকেই তাদের অ্যাকাউন্টে ভাতার টাকা জমা হতে শুরু করবে বলে ২১ নভেম্বর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন থেকে জানান।
লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জনপ্রিয়তা ও সম্প্রসারণ
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার রাজ্যের অন্যতম জনপ্রিয় জনকল্যাণমূলক প্রকল্প। প্রতি মাসের শুরুর দিকেই উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি ভাতার টাকা পাঠানো হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই প্রকল্প সর্বজনীন এবং এতে কোনো আর্থিক বা সামাজিক শ্রেণিভেদ নেই। স্মার্টফোন, পাকা বাড়ি বা দুচাকার গাড়ি থাকা সত্ত্বেও মহিলারা এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে পারেন।
আরো পড়ুন: RRB NTPC 2024 Exam Date, RRB NTPC Admit Cards 2024
লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও সম্ভাব্য বৃদ্ধি (Lakshmir Bhandar)
২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে আরও আর্থিক সহায়তা বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা চলছে। অনেকেই মনে করছেন, ভবিষ্যতে ভাতার পরিমাণ মাসিক ২০০০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে। যদিও এই বিষয়ে এখনও সরকারিভাবে কোনো ঘোষণা করা হয়নি, তবে রাজ্যের জনসাধারণ এই বিষয়ে বেশ আশাবাদী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য
সাম্প্রতিক নিউস ১৮ বাংলা সাক্ষাৎকারে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ভালো উদ্যোগের প্রচার এবং কপি করা নিয়ে তার কোনো আপত্তি নেই। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলার মহিলারা সারা জীবন ভাতা পাবেন, যা তাদের আর্থিক স্বচ্ছলতা বজায় রাখতে সহায়ক।