আবাস যোজনার প্রথম কিস্তির টাকা কিভাবে সঠিকভাবে খরচ করবেন তা জানাতে মালদহ জেলা প্রশাসন ব্লকে ব্লকে অরিয়েন্টেশন ক্যাম্প শুরু করেছে বিস্তারিত জানতে পড়ুন-
মালদা জেলা প্রশাসন এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে যা আবাস যোজনার প্রথম কিস্তি সঠিকভাবে খরচ করতে উপভোক্তা তে সহায়তা করবে। জেলার প্রতিটি ব্লকে ওরিয়েন্টেশন ক্যাম্প আয়োজন করে উপবাদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। কাজল ব্লক থেকে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং এটি পর্যায়ক্রমে জেলার সব ব্লকে সম্পন্ন হবে।
আবাস যোজনা ওরিয়েন্টেশন ক্যাম্পের প্রয়োজনীয়তা
আবাস যোজনা আওতায় বাই তৈরির জন্য রাজ্য সরকার প্রথম কিস্তি হিসেবে কড় কড়ে ৬০ হাজার টাকা প্রদান করেছেন । এই টাকা অনেকে পেয়ে গিয়েছেন, আবার অনেকের অ্যাকাউন্টে ঢুকতে চলেছে। পূর্বে দেখা গেছে এই অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহার না করার কারণে প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্যেই ব্যাহত হয়। অনেক ক্ষেত্রে উপভোক্তা জানেন না যে তাদের একাউন্টে জমা হওয়া অর্থ আবাস যোজনার জন্য। ফলে অজান্তেই এই টাকার অপব্যবহার হয়েছে।
এছাড়াও বাড়ি তৈরীর ক্ষেত্রে সরকারের সুনির্দিষ্ট গার্ডেন রয়েছে, যেমন ঘরের মাপ এবং গঠন এরকম নির্দেশনা উপেক্ষা করার ঘটনা আগেও ঘটেছে। তাই এবার উপভোক্তাদের সচেতন করতে এই প্রকল্পের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে মালদহ জেলা প্রশাসন এই উদ্বেগ গ্রহণ করেছে।
ক্যাম্পের কর্মসূচি ও কার্যক্রম
মালদহ জেলার জেলাশাসক নীতিনশিঙহানিয়ার তত্ত্বাবধানায় এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে। আবাস যোজনার চূড়ান্ত তালিকায় ৯৯ হাজার ৬৮০ জন উপভোক্তা যোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছেন। প্রথম ধাপে ২৯ হাজার ৭৮১ জন উপভোক্তাকে প্রথম কিস্তির টাকা প্রদান করা হচ্ছে।
আরো পড়ুন: বাংলার বাড়ি প্রকল্প ১৩ লক্ষ ভূমিহীনদের জমিসহ বাড়ি শীঘ্রই !
গাজোল ব্লক থেকে শুরু হওয়া এই উদ্যোগের প্রথম দিনেই ৩০০ জন উপভোক্তাকে ডাকা হয়েছিল। সেই ক্যাম্পে উপস্থিত অনেক উপভোক্তা এই নির্দেশিকা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এছাড়াও উপস্থিতি সেই সমস্ত উপভোক্তাদের হাতে সরকারি অনুমোদনও তুলে দেওয়া হয়।
আবাস যোজনার ওরিয়েন্টেশন ক্যাম্পে আলোচিত বিষয় কি?
Orientation ক্যাম্পের মাধ্যমে উপভোক্তাদের নিচে বিষয়গুলো শেখানো হয়।
১) আবাস যোজনার প্রথম কিস্তির টাকা সঠিকভাবে খরচের নির্দেশনা:
আবাস যোজনার প্রাপ্ত টাকা শুধুমাত্র বাড়ি তৈরির জন্য ব্যবহার করতে হবে।
বাড়ি তৈরীর যে গাইডলাইন সেই অনুযায়ী কাজ করতে হবে।
২) অপব্যবহার রোধ:
আবাস যোজনার উপভোক্তারা যাতে টাকা অপব্যবহার না করেন তা নিশ্চিত করা।
৩) সরকার নির্দেশনা মেনে চলা:
আবাস যোজনা বাড়ি তৈরির কাজ নির্ধারিত সময়ে শুরু না হলে পরবর্তী কিস্তি বন্ধ হয়ে যাবে।
ক্যাম্পের ফলাফল ও প্রতিক্রিয়া
এই উদ্যোগ ইতিমধ্যে আবাস যোজনার উপভোক্তাদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। গাজোল ব্লকের ক্যাম্পে উপস্থিত থাকা উপভোক্তা জানিয়েছেন, তারা জানতেন না প্রথম কিস্তির টাকা পেয়ে সঠিকভাবে খরচ কিভাবে হবে? ক্যাম্পে এসে তারা এই নতুন নির্দেশনা পেয়ে সন্তুষ্ট।
আরো পড়ুন: এবার বার্ধক্য ভাতা সবাই পাবেন! লক্ষীর ভান্ডারে নতুন উদ্যোগ নবান্নের
আবাস যোজনা পূর্ববর্তী সমস্যা গুলি
পূর্বেও এই অর্থ ব্যবহারে বেশ কিছু সমস্যা দেখা গেছে:-
অজানা: উপভোক্তারা অনেকে জানতেন না বা বুঝতে পারেননি যে তাদের অ্যাকাউন্টে আশা টাকা আবাস যোজনার।
অপব্যবহার: কিছু উপভোক্তা টাকা পেয়ে বাড়ি তৈরীর পরিবর্তে অন্য কাজে ব্যবহার করেছেন।
গাইডলাইন লংঘন: নির্ধারিত গাইডলাইন মেনে না চলার ঘটনা ঘটেছে।
এবার থেকে এ ধরনের সমস্যা দূর করতেই মালদাহ জেলা প্রশাসন আবাস যোজনার ওরিয়েন্টেশন ক্যাম্পের ব্যবস্থা নিয়েছে।
মালদহ জেলা প্রশাসনের বক্তব্য:
মালদহ জেলা শাসক নীতিন সিংহানিয়া বলেন, আবাস যোজনার উপভোক্তারা প্রথম কিস্তির টাকা পেয়ে সঠিক নিয়ম মেনে বাড়ি তৈরি করতে পারবেন সেটাই আমাদের লক্ষ্য। বিডিও সুদীপ্ত বিশ্বাস বলেন উপভোক্তাদের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়ার জন্য এই ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে এবং তা অনেকেই পেয়েও গিয়েছেন সেই নির্দেশ।